গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কি হয় ১০ টি উপকারিতা
খেজুর একটি উচ্চ শর্করাযুক্ত ফল। গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কি হয় এই বিষয়ে সবারই জানা উচিত। গর্ভাবস্থায় খেজুর খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই রয়েছে। কিন্তু যে সব গর্ভবতী মায়েদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের খেজুর খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
অনেক গর্ভবতী মায়ের শরীরে ফোলেইট সম্পূরক খাবার হিসেবে গ্রহণ করতে হয়। গর্ভাবস্থায় খেজুর শুধুমাত্র মা এবং শিশুর জন্য নিরাপদ নয় বরং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। চলুন এক নজরে দেখে নেই-
গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কি হয়?
- জরায়ুর পেশি শক্তিশালী করে,
- প্রসব বেদনা কমায়,
- দ্রুত রক্ত উৎপাদন করে,
- প্রসব প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করে,
- হজম শক্তি বাড়ায়,
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে,
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উৎপাদন করে,
- শরীরের শক্তি যোগায়,
- রক্তশূন্যতা পূরণ করে।
জরায়ুর পেশি শক্তিশালী করে:
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খেজুর খেলে জরায়ুর পেশি শক্তিশালী হয়। এবং প্রসবকালে যে সব জটিলতা তৈরি হয় নিয়মিত খেজুর সেবনে সেগুলো দূর হয়।
প্রসব বেদনা কমায়:
খেজুরে বিদ্যমান ফ্যাটি অ্যাসিড সারভাইক্যাল মাসল ফেলিক্সিবল করে। ফলে প্রসবের সময় যে ব্যথা সেই ব্যথা অনেকাংশেই লাঘব হয়।
দ্রুত রক্ত উৎপাদন করে
প্রসবের সময় মায়ের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্ত বের হয়ে যায়। এই রক্তশূন্যতা পূরণ করার জন্য অবশ্যই খেজুর খাওয়া উচিত। খেজুর দ্রুত রক্ত উৎপাদন করতে সহায়তা করে।
প্রসব প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করে:
গর্ভাবস্থায় শেষের তিন মাস প্রতিদিন খেজুর খেলে সার্ভিক্স উন্নত হয়। ফলে প্রাকৃতিকভাবে প্রসব ব্যথা তৈরি হয়। খেজুর প্রাকৃতিকভাবে প্রসব ব্যথা তৈরি করতে সাহায্য করে।
হজম শক্তি বাড়ায়:
গর্ভাবস্থায় হজম শক্তি খুব নাজুক হয়ে যায়। প্রতিদিন খেজুর খেলে হজম শক্তি উন্নত হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে:
খেজুরে রয়েছে উচ্চ পটাসিয়াম। এটি গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ খুব দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উৎপাদন করে:
খেজুর একটু অত্যন্ত পুষ্টিকর ফল যাতে বিদ্যমান রয়েছে ফ্লাভানয়েড ও ফেনোলিক যৌগ। তাছাড়া খেজুরের বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।
শরীরের শক্তি যোগায়:
খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট। এটি দ্রুত শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে এবং দুর্বলতা দূর করে।
রক্তশূন্যতা পূরণ করে:
প্রসবকালীন বা প্রসব পরবর্তী যে রক্তক্ষরণ হয় তা খুব দ্রুত পূরণ করার জন্য প্রতিদিন খেজুর খাওয়া উচিত।
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে খেজুর খাওয়া যাবে কি
গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে খেজুর খাওয়া যাবে কি? এই প্রশ্নটি অনেকেই করে থাকেন। গর্ভাবস্থায় পুরো নয় মাস জুড়ে খেজুর খাওয়া যাবে। খেজুর থেকে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। যেসব গর্ভবতী মায়েরা ভাত খেতে পারেন না বা বিভিন্ন খাবারে বমি বমি ভাব হয় তারা খেজুর খেতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাস যারা প্রচুর পরিমাণে বমি করেন তাদের পুষ্টিঘাতে পূরণের জন্য খেজুর খাওয়া জরুরি। তবে প্রতিদিন ৫ টার বেশি খেজুর খাওয়া উচিত নয়। কারণ এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে শর্করা থাকে যা উচ্চ রক্তচাপ বৃদ্ধির জন্য দায়ী। তাছাড়া প্রেগনেন্সিতে ডায়াবেটিস বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। খেজুরে থাকা অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট ডায়াবেটিস এর মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কোন খাজুর খাওয়া ভালো
গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন ড্রাই ফ্রুটস যেমন: বাদাম, আখরোট, খেজুর, কিসমিস ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। কারণ এগুলো তো রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ক্যালসিয়াম। এই প্রত্যেকটি উপাদান গর্ভবতী মা এবং গর্ভস্থ শিশুর জন্য ভালো। গর্ভাবস্থায় যে কোন খেজুর খাওয়া যেতে পারে। সব ধরনের খেজুর ই শরীরে শক্তি জগতের সাহায্য করে।
শেষ কথা
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে কি হয় এবং খেজুর খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। গর্ভাবস্থায় খেজুর খাবেন কিনা এটা নিয়ে যারা চিন্তিত আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
১) গর্ভবতী মহিলা খেজুর খেলে কি হয়?
উত্তর: গর্ভাবস্থায় খেজুর খেলে রক্তশূন্যতা দূর হয়।
২) খেজুর খেলে কি শরীরে রক্ত হয়?
উত্তর: খেজুর খেলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়ে এবং রাতে ঘুম ভালো হয়।
৩) গর্ভাবস্থায় বেশি মিষ্টি খেলে কি হয়?
উত্তর: গর্ভাবস্থায় বেশি মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিসের ছুটি বাড়ে।
৪) প্রতিদিন কি পরিমাণ খেজুর খাওয়া উচিত?
উত্তরঃ ৪ থেকে ৫ পিস।