Chorabali Logo
স্বাস্থ্য

গর্ভাবস্থায় চিড়া খেলে কি হয়

অ্যাপোলো হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী বলেন – গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়ে ওজন বাড়ানো থেকে পুষ্টিকর খাবার কম পরিমাণে হলেও খেতে হবে। অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন গর্ভাবস্থায় চিড়া খেলে কি হয়? তাদের জন্য সাজানো হয়েছে আমাদের আজকের আইটিকেল। 

আমরা সবাই জানি চিড়া একটি পুষ্টিকর খাবার। তবে চিড়াতে রয়েছে ৭০ ভাগ কার্বোহাইড্রেট এবং ৩০ ভাগ চর্বি। আমরা সবাই জানি গর্ভবতী মহিলাদের ওজন ধীরে ধীরে অনিয়ন্ত্রিত হতে থাকে।

অধিক পরিমাণে গর্ভাবস্থায় চিড়া খেলে গর্ভবতী মায়ের ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকে। তাছাড়া খালি পেটে গর্ভবতী মা চাইলে এক মুঠো করে চিড়া প্রতিদিন খেতে পারে। এতে করে হজম শক্তি উন্নত হবে। 

তবে শুকনো চিড়া খাওয়ার থেকে গর্ভবতী মা যদি কোন তরল এর সঙ্গে মিশিয়ে চিড়া খান তবে এটি তার শরীরের জন্য ভালো। দুধ, কলা, নারিকেল ইত্যাদি উপাদান চিড়ার সঙ্গে মিশিয়ে খেলে গর্ভবতী মায়ের অনেক পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। চলুন এক নজরে দেখে নেই গর্ভাবস্থায় চিড়া খেলে কি হয়?

  • হজম শক্তি উন্নত হয়,
  • চিড়ায় বিদ্যমান ফাইবার এবং আয়রন গর্ভস্থ শিশুর জন্য নিরাপদ,
  • সকালে খালি পেটে চিড়া খেলে গর্ভবতী নারীর ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে,
  • চিড়া গর্ভবতী নারীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে,
  • চিড়া গর্ভবতী নারীদের ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে,
  • অন্ত্রের প্রদাহ দূর করে।

হজম শক্তি উন্নত হয়:

গর্ভবতী নারীরা হজমের বিভিন্ন সমস্যায় ভুগে থাকেন। নিয়মিত পেটে গ্যাস হওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যায় ভোগা এগুলো গর্ভবতী নারীদের নিত্যদিনের সমস্যা। নিয়মিত চিড়া খেলে গর্ভবতী নারীদের হজম শক্তি উন্নত হয়। এবং পেটের যাবতীয় সমস্যা দূর হয়।

ফাইবার এবং আয়রন গর্ভস্থ শিশুর জন্য নিরাপদ: 

গর্ভস্থ শিশুর ফাইবার এবং আয়রন এই দুটো খুব প্রয়োজন। তাছাড়া চিড়ায় বিদ্যমান ফাইবার গর্ভবতী মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। তাই গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় ফাইবার ও আয়রন পাওয়ার জন্য নিয়মিত চিড়া খাওয়া উচিত।

চিড়া খেলে গর্ভবতী নারীর ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে:

চিড়াতে চর্বির পরিমাণ খুবই কম। এটি পরিমিত পরিমাণে খেলে গর্ভবতী নারীর ওজন নিয়ন্ত্রিত থাকে। সেই সাথে গর্ভবতী নারীর বারবার খাবার প্রবণতা ও কমে আসে।

চিড়া গর্ভবতী নারীদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে: 

অনেকেই গর্ভবতী হওয়ার আগে থেকেই ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগে থাকেন। আবার অনেকে গর্ভবতী হওয়ার পরে ডায়াবেটিস এ আক্রান্ত হয়ে থাকেন। গর্ভাবস্থার আগে এবং গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস এ দুটোই গর্ভস্থ শিশুর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। 

যেসব গর্ভবতী নারী ডায়াবেটিসের ভুগছেন তারা নিয়মিত সকালে এক মুঠো শুকনো চিড়া খাওয়ার অভ্যাস করে তুলুন। এতে করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত থাকার পাশাপাশি পেটের অন্যান্য সমস্যা দূর হবে।

চিড়া গর্ভবতী নারীদের ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে: 

কোষ্ঠকাঠিন্যের পাশাপাশি ডায়রিয়া ও গর্ভবতী নারীদের একটি জটিল সমস্যার নাম। খাবারে একটু ব্যতিক্রম হলে গর্ভবতী নারীদের ডায়রিয়া পরিলক্ষিত হয়। চিড়ায় রয়েছে আলসারেটিভ কোলাইটিসিস নামক উপাদান। এই উপাদানটি গর্ভবতী নারীদের ডায়রিয়া দূর করতে সাহায্য করে।

অন্ত্রের প্রদাহ দূর করে:

গর্ভবতী নারীদের পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা এবং পেটে গ্যাস হওয়া নিত্যদিনের সমস্যা। এই সমস্যা থেকে মোকাবেলার জন্য গর্ভবতী নারীদের নিয়মিত চিড়া খাওয়া উচিত। এতে করে অন্ত্রের প্রদাহ সম্পূর্ণরূপে দূর হবে এবং পেটের সমস্যা কমে আসবে।

শেষ কথা 

গর্ভাবস্থায় চিড়া খেলে কি হয় এর উত্তর আমরা আজকের আর্টিকেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে চিড়া খেলে কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে এবং ঠান্ডা লাগার সমস্যা তৈরি হয়। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত পরিমাণে চিড়া খেলে হৃদরোগের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। তাই গর্ভবতী থাকাকালীন সময়ে প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে চিড়া খাওয়া উচিত।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

১) গর্ভাবস্থায় কি কি শাক খাওয়া যাবে না?

উত্তর: গর্ভাবস্থায় সব ধরনের সবুজ শাকসবজি খাওয়া যাবে।

২)গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে না?

উত্তর: বিভিন্ন ধরনের প্রসেসড ফুড, ফাস্টফুড, আদা সিদ্ধ মাংস, কফি এবং নেশা জাতীয় দ্রব্য এ সময় গ্রহণ করা যাবে না।

৩) গর্ভাবস্থা বৃদ্ধির খাবার?

উত্তর: প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খান, তাজা ফলমূল এবং শাকসবজি খাওয়া উচিত।

Mahedi

পেশায় একজন চাকরিজীবী আমি। লেখালিখির শখ অনেক আগে থেকেই। এই শখকে পুজি করে মানুষের মাঝে জ্ঞান বিতরণের সামান্য চেষ্টা আমার। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখালিখি করতে বেশি পছন্দ করি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close